Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Image
Title
সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর এম.এ জলিল স্মৃতি ফলক...
Details
একটি সংগ্রামী চেতনার নাম মেজর এম.এ. জলিল। সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর এম,এ, জলিল দেশের একজন সাহসী সন্তানের নাম। তিনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক যোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধ তাকে করেছিল লড়াকু এক সৈনিক। দীর্ঘ এক যুগ জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করেছেন তিনি। আমৃত্যু সংগ্রামী জীবন তাকে করেছিল প্রতিবাদী, রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে জাতিকে রক্ষা , জালিম-শোষক ও লুটেরা শাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন। বিপ্লবী চিন্তার পরিবর্তন ও ইসলামের চেতনায় উজ্জীবন তার মধ্যে পূর্ণতা এনেছিল। এই অকুতোভয় দেশপ্রেমিক মানুষটির জীবন সম্পর্কে জানার কৌতূহল থাকাই স্বাভাবিক। ১৯৪২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার উজিরপুরে মামার বাড়িতে মেজর জলিলের জন্ম। জন্মের তিন মাস আগেই পিতা মারা যান। জন্ম নেন এতিম হয়ে। জন্মের পর থেকেই তিনি জীবনের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হন। মায়ের স্নেহ-ভালোবাসাই ছিল তার জীবনে চলার পথের একমাত্র পাথেয়। ১৯৬০ সালে উজিরপুর ডব্লিউবি ইনস্টিটিউশন থেকে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাস করেন। মুক্তিযুদ্ধের একজন সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন এর মধ্য দিয়ে আমার যে ব্যক্তি সুনাম অর্জিত হয়েছে তা দিয়েও আমি সেনাবাহিনীর একজন প্রতিষ্ঠিত অফিসার হিসেবে আজীবন ভোগ বিলাসের মধ্যেই কালাতিপাত করতে সক্ষম হতাম। সেই ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠার পথে পা না বাড়িয়ে আমি একটি নিশ্চিত,নিরাপদ এবং উজ্জ্বল জীবন ছুঁড়ে ফেলে মেহনতী জনগণের কাতারে দাঁড়ালাম জাসদ সভাপতি হিসেবে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হওয়া সত্ত্বেও আমি জাসদ সভাপতির পদ বেহায়ার মত আঁকড়ে থাকার সুযোগ গ্রহণ করতে পারতাম। জাসদ সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে আমিও বিনা কষ্টে সরকারী পদমর্যাদা লাভ করে আরাম আয়েশের পথ বেছে নিতে সক্ষম হতাম। যে দেশে আপোস করলেই অর্থ,পদ-মর্যাদা লাভ এবং ভোগ-লালসা চরিতার্থ করার সুবর্ণ সুযোগ বিদ্যমান,সেক্ষেত্রে এ সহজ পথে অগ্রসর না হয়ে আমি বেছে নিলাম ইসলামী বিপ্লব সংগঠন করার কঠিন পথ। লোভ,মোহ আমাকে আদর্শচ্যূত করতে পারে না বলেই আমার পথ সর্বদা কন্টকাকীর্ণ এবং দুর্গম থেকে যায়। আমি একজন তৌহিদবাদী সৈনিক। (কৈফিয়ত ও কিছু কথা/মেজর জলিল রচনাবলী,পৃঃ ১২৮) “প্রথম রাজবন্দী দশা”-র স্মৃতিকথা বইয়ে তিনি বলেছেন,-“যশোর সেনা ছাউনীর অফিসার্স কোয়ার্টারের একটি নির্জন বাড়িতে আমাকে সকাল এগারোটায় বন্দী করা হয়। বাড়ী না যেন হানাবাড়ী। ঘুটঘুটে অন্ধকার। আশেপাশে বেশ নরকঙ্কাল পড়ে আছে। ঘরের রুমে মানুষের রক্তের দাগ। কোন ধর্ষিতা বোনের এলোমেলো ছেঁড়া চুল।” উল্লেখ্য- ১৯৮৯ সালের ১১ নভেম্বর মেজর জলিল পাকিস্তান যান। ১৬ নভেম্বর রাজধানী ইসলামাবাদে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সাথে সাথে তাকে কিনিকে ভর্তি করা হয়। ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ২২ নভেম্বর তার লাশ ঢাকায় আনা হয় এবং পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য, মেজর (অব:) জলিলই সেই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি যার লাশ দাফনের মাধ্যমেই মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন শুরু হয়েছে। মৃত্যুর সময় মেজর (অব:) এম এ জলিল মা, স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রেখে গেছেন।