Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

গ্রাম আদালত

গ্রাম আদালত

ইউনিয়ন পরিষদ শালিস ব্যবস্থা :

২০১৩-২০১৪ সালে ০৮নং শিকারপুর-উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদে বিভিন্ন জমি-জাম ও পারিবারিক ইত্যাদি নিয়ে মোট মামলা-১৫টি। ২/৩টি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। বাকি মামলা গুলো চলমান আছে।

 

মাদারীপুর লিগাল এইড এসোসিয়েশন (গ্রাম আদালত) :

মো.আ.ছালাম হাওলাদার (ইউনিয়ন প্রতিনিধি)

পিতা. মো.আয়নাল হাওলাদার,

গ্রাম. উজিরপুর, উপজেলা.উজিরপুর, জেলা.বরিশাল।

মোবাইল নং-০১৭১১-৩৭১২২৯

E-mail: mdplabonfx@gmail.com

২০১৩-২০১৪ বছরে গ্রাম আদালত মোট মামলা-৬টি। সমাধান-৪টি। ২টি চলমান আছে।

 

বিচার ব্যবস্থায়দেশের দরিদ্র মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত ও সহজ করতেই গঠন করা হয়েছে গ্রাম আদালত। গ্রামের দরিদ্র মানুষ যাতে সহজে ওনামমাত্র খরচেতাদের এই অধিকার রক্ষা বা প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সেজন্যেই গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ আদালতে গ্রামের ছোটখাটো বিরোধ বড় আকারধারণ করার আগেইসহজে নিষ্পত্তি করা সম্ভব। গ্রামীনজনপদে ন্যায়বিচারের ভিত শক্তিশালী করতে ২০০৬ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমেগ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ সরকার। ইউনিয়নপর্যায়েএই আদালত জজ আদালতেমামলার চাপ কমিয়ে গোটা বিচার ব্যবস্থায় গতিশীলতা এনেছে। তবে সাধারণ মানুষ ও তাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা গ্রাম আদালতপরিচালিত হওয়ায় বা জনপ্রতিনিধিদের আচরণগত ত্রুটির কারণে এই আদালত অনেক সময় ভাবমূর্তি রক্ষা করতেব্যর্থ হয়। কিন্তু আইনগত দিক থেকে গ্রাম আদালতএকটি পূর্ণাঙ্গ আদালত।
গ্রাম আদালতের জরিমানা :
১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত আইন অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি দু’ধারাতেই বিচার করার কর্তৃত্ব রাখে।এক্ষেত্রে জরিমানা বা ক্ষতিপূরণের মূল্যমান৫ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল। ২০০৬ সালের মে মাসে ১৯ নংআইনের অধীনে ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত অধ্যাদেশের সংশোধন হয়ে যে আইনটি প্রণীত হয়, সেটি কম-বেশি আগের আইনটির মতোই।তবে এখানে প্রধান পরিবর্তনটি এসেছেমামলার ক্ষতিপুরনের আর্থিক সীমায়, যা৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। ১৯৭৬ এবং ২০০৬ উভয় আইনেই এর গঠন, পরিচালনা, মামলাযাচাই-বাছাই, ডিক্রি জারি এবংকার্যবিবরণীর নথি সংরক্ষণের কাজগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম হিসাবেচিহ্নিত করা হয়েছে।
যে সকল অভিযোগের বিচার গ্রাম আদালতে হয়না
ক) ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে
অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি পূর্বে অন্য কোনআদালত কর্তৃক কোন আদালত গ্রাহ্য অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে থাকে।
খ) দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে
• যখন কোন অপ্রাপ্ত বয়স্কের স্বার্থ জড়িতথাকে;
• বিবাদের পক্ষগণের মধ্যে বিদ্যমান কলহেরব্যাপারে কোন সালিশের ব্যবস্থা (সালিশি চুক্তি) করা হয়ে থাকলে;
• মামলায় সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বাকার্যরত কোন সরকারি কর্মচারি হয়ে থাকলে;
*কোন অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধেগ্রাম আদালতে কোন মামলা দায়ের করা যাবে না।
গ্রাম আদালতের মাধ্যমে গ্রামের দরিদ্রমানুষ জজ আদালতে জমে থাকা মামলার ঘানি এবং হয়রানির হাত থেকে মুক্তি পাবে।গ্রাম আদালত অধ্যাদেশও সালিসী আদালতঅধ্যাদেশ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে নির্দিষ্ট বিধি অনুযায়ী বিচার সম্পাদনের দায়িত্বদিয়ে এ আদালত গঠন করা হয়েছে। ফলেশহরে না গিয়ে ঘরে বসেই গ্রাম আদালতের সুবিধা পাওয়া যায়। আদালত আইন-১৯৭৬ এবং সংশোধিত গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী এইআদালতে ফৌজদারি ও দেওয়ানী উভয় ধরনের বিরোধ মিমাংসার সুবিধা পাবেন গ্রামের প্রান্তিকজনগোষ্ঠি। যেমন:
• কম সময়ে ও নামমাত্র খরচে ন্যায্য বিচারপাওয়া;
• এ আদালতে উকিল নিয়োগের সুযোগ নেই বলেবিচার প্রক্রিয়ায় গরিব লোকেরা সহজে প্রবেশ করতে পারে;
• গ্রাম আদালতের বিচার পদ্ধতি আনুষ্ঠানিকহলেও মীমাংসা বন্ধুসুলভ হয়;
• গ্রাম আদালত আইনি পদ্ধতি হলেও বিবাদমানপক্ষসমূহ এটিকে সামাজিক সংগঠন মনে করে এবং গ্রাম আদালতের রায়কে সামাজিকসিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচনা করে;
• গ্রাম আদালতের রায়ের পরও বিবাদমানপক্ষদ্বয়ের মধ্যে সামাজিক বন্ধন অটুট থাকে যা ম্যাজিস্ট্রেট বা উচ্চ আদালতেমামলা চলাকালীন বা রায়ের পর বিদ্যমান থাকে না;
• গ্রাম আদালতের বিচারকগণ স্থানীয় হওয়ায়রায় বাস্তবায়ন করা সহজ হয়;
গ্রাম আদালতের আইনগত ভিত্তি থাকায় এইআদালতের রায় উচ্চ আদালতে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
সরকারী এই সেবা পেতে একটি সাদা কাগজেইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ জানাতে হয়।
গ্রাম আদালত কর্তৃক বিচারযোগ্য মামলারক্ষেত্রে বিবাদের যে কোন পক্ষ বিচার চেয়ে গ্রাম আদালত গঠনের জন্য সংশ্লিষ্টইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট ৪ টাকা (দেওয়ানি মামলা হলে) অথবা ২ টাকা(ফৌজদারি মামলা হলে) ফি দিয়ে আবেদন করতে পারেন। আবেদনপত্রে যেসব বিবরণ থাকতে হবে-
১. যে ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করা হচ্ছে তারনাম;
২. আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা ও পরিচয়;
৩. যে ইউনিয়নে অপরাধ ঘটেছে অথবা মামলারকারণের সৃষ্টি হয়েছে তার নাম;
৪. সংক্ষিপ্ত বিবরণাদিসহ অভিযোগ বা দাবিরপ্রকৃতি ও পরিমাণ;
৫. প্রার্থিত প্রতিকার;
৬. আবেদনকারী লিখিত আবেদনপত্রে স্বাক্ষরকরবেন; উল্লেখ্য, কোন অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনআবেদন করা যাবে না। চেয়ারম্যান অভিযোগ অমূলক মনে করলে আবেদননাকচ করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রেনাকচের কারণ লিখে আবেদনপত্র আবেদনকারীকে ফেরত দিতে হবে।
অপ্রকৃতিস্থ ব্যক্তি ছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সকলেই এই গ্রাম আদালতের সুবিধা পাবেন।
১ জন চেয়ারম্যান এবং বিবাদের প্রত্যেকপক্ষ কর্তৃক মনোনীত দুজন সদস্য নিয়ে মোট ৫ জন সদস্য নিয়ে গ্রাম আদালত গঠিতহয়। প্রত্যেক পক্ষ কর্তৃক মনোনীত ২ জন সদস্যের একজনসংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হবেন। ইউনিয়নপরিষদের চেয়ারম্যানগ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হবেন। তবেযদি চেয়ারম্যান কোন কারণবশতঃ তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হন, কিংবা তার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে আপত্তি ওঠে তাহলেপরিষদের অন্য কোন সদস্য আদালতের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করবেন। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন পক্ষ সদস্য মনোনয়ন দিতে ব্যর্থ হন তবে উক্ত মনোনয়নছাড়াই আদালত বৈধভাবে গঠিত হয়েছে বলে গণ্য হবে। যদি কোন পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের কোন সদস্যকে পক্ষপাতিত্বের কারণে মনোনীতকরতে না পারেন তাহলেচেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে অন্য কোন ব্যক্তিকে মনোনীত করা যাবে।
বিচারের আবেদন করার পর বাদী এবং বিবাদীউভয়ইকে গ্রাম আদালতের দুজন বিচারক মনোনীত করতে হয়। মনোনীত সদস্যদের একজন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হবেন এবং অন্যজন এলাকারগণ্যমান্য ব্যক্তিহবেন।
গ্রাম আদালতের রায় প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়। যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দ্বারা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তার অনুপাত রায়ে অবশ্যই উল্লেখ করারবিধান রয়েছে। এবং আদালতের রায়ের পরডিক্রি জারি হয়।
গ্রাম আদালতে সিদ্ধান্ত যদি সর্বসম্মতবা চার-এক (৪:১) ভোটে গৃহীত হয় বা চারজন সদস্যের উপস্থি'তিতে তিন-এক (৩:১) সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হয়, তাহলে উক্ত সিদ্ধান্ত পক্ষদ্বয়ের উপর বাধ্যতামূলক হবে এবংসেক্ষেত্রে উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনরূপ আপিল চলবে না;
কোন কারনে গ্রাম আদালতের সেবা পাওয়া নাগেলে-
• বিধান অনুযায়ী যদি তিন-দুই ভোটে কোনসিদ্ধান্ত হয় তবে সে সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক হবে না। সিন্ধান্তঘোষণার ত্রিশ দিনের মধ্যে যে কোন পক্ষ ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে প্রথম শ্রেণীরম্যাজিস্ট্রেট (কগনিজেন্স আদালত) এবং দেওয়ানি মামলার ক্ষেত্রে সহকারী জজ(মুন্সেফ)-এর আদালতে আপিল করতে পারবেন;
• গ্রাম আদালতের ডিক্রি বা ক্ষতিপূরণেরটাকা প্রদানের নির্দেশ ৬ মাসের অধিক হবে না।
গ্রাম আদালত অর্ডিনেন্স, ১৯৭৬ এর মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেপুনরায় বিচারকার্যসম্পাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গ্রামআদালত কর্তৃক ফৌজদারি বিচারযোগ্য ধারাগুলো হলো- দন্ডবিধির ১৬০, ৩২৩, ৩৩৪, ৩৪১, ৩৪২, ৩৫২, ৩৫৮, ৪২৬, ৫০৪, ৫০৬(প্রথম অংশ), ৫০৮, ৫০৯ এবং ৫১০ ধারা। এ ছাড়াও ৩৭৯, ৩৮০, ৩৮১, ৪০৩, ৪০৬, ৪১৭, ৪২০, ৪২৭, ৪২৮, ৪২৯ (পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হলে) এবং ১৪১, ১৪৩, ১৪৭ গবাদী পশু সম্পর্কিত (আসামী দশ জনের নিচে হলে), ১৮৭১ এর ২৪/২৬/২৭ ধারা।
দেওয়ানি মামলাগুলো হলো- (১) কোনো চুক্তিবা অন্য কোন দলিল মুলে প্রাপ্য টাকা আদায়ের জন্য মামলা; (২) কোনো অস্থাবর সম্পত্তি বা উহার মূল্য আদায়ের মামলা; (৩) কোনো স্থাবর সম্পত্তি বেদখল হওয়ারএবং বছরের মধ্যে উহার দখল পুনরুদ্ধারের জন্য মামলা; (৪) কোনো অস্থাবর সম্পত্তি বেআইনিভাবে লওয়া বা বিনিষ্ট করার দরুণক্ষতি পূরণের মামলা; (৫)গবাদী পশুর অনাধিকার প্রবেশের দরুণ ক্ষতি পূরণের মামলা এবং (৬) কৃষি শ্রমিকের পরিশোধযোগ্যমজুরী ও ক্ষতি পূরণেরমামলা (উপরেল্লিখিত মামলা সমূহের যখন স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির মূল্যমান ২৫,০০০/- টাকা বা তার কম হবে)।